বুধবার, ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং বাল্যবিবাহ রোধসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: হুমায়ুন কবীর।
মতবিনিময় সভায় বক্তৃতাকালে ড. মো: হুমায়ুন কবীর বলেন, বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক অপরাধ। বাল্যবিবাহ যখন হয়, তখন তা একটি পরিবার থেকেই হয়। তাই বাল্যবিবাহ নিজেদের পরিবারেই প্রথম রোধ করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সকল প্রকার সামাজিক বাধাসমূহ রোধ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বিজ্ঞানসম্মতভাবে চিন্তা করলে দেখা যায়, বারো বছরের একটা মেয়ে সন্তান নেওয়ার শারীরিক অবস্থায় থাকে না। শারীরিক জটিলতায় ভুগতে হয়। আজ এখানে আমরা যারা আছি, সবাই এই শিক্ষা নিই, আঠারো বছরের নিচে কোনো মেয়েকে বিয়ে দেব না এবং আমাদের প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনদেরকে এই বিষয়ে বুঝাব।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ইভটিজিংও ঘর থেকেই শুরু হয়। এর কারণ হল, একজন নারীকে যখন অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া হয়। তখন সে ফ্যামিলির সব বিষয় একা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়, পরিবারের বাচ্চারা তা দেখে দেখে শিখে। তখন ছেলে সন্তানেরা মনে করে এভাবে বউকে নির্যাতন করতে হয়, মেয়েরা মনে করে বিয়ের পরে তাদের হয়তো এভাবেই নির্যাতন সহ্য করতে হবে। তখন দায়ভার আমাদের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ওপর পড়ে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি পরিবারেই ছেলে-মেয়েদেরকে শিক্ষা দিতে হবে কিভাবে নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হয়। কিভাবে নারীর সঙ্গে আচরণ করতে হয়। ২০৪১ সালে আমরা একটি উন্নত দেশে উন্নীত হতে চাই। সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করছে। বর্তমান সরকার নারী বান্ধব সরকার। নারীদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমাদেরকেও বাল্যবিবাহ রোধে এগিয়ে আসতে হবে। এসময় তিনি এলাকার মসজিদের ইমামগণেেক বাল্যবিবাহ রোধ করতে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়ে তিনি আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দেশের উন্নয়নে সকলকে কাজ করার কথা বলেন।
সভার শুরুতে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শবনম শিরিন জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট্ উপস্থাপন করেন। সভায় উপস্থিত সুধীগণ নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং বাল্যবিবাহ রোধে মতামত প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। সভায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের প্রধানগণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, এনজিও প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধিগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, নারীপ্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সম্পাদক এবং সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।