রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: সুপার টাইফুন রাইয়ের তাণ্ডবে ফিলিপিন্সের শুধু বোহোল প্রদেশেই অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম চলার মধ্যেই রোববার প্রদেশটির গভর্নর আর্থার ইয়াপ দুঃখজনক সংবাদটি দিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সরকারিভাবে ফিলিপিন্সে টাইফুন রাইয়ে মৃতের সংখ্যা এখনও ৩১ জনই আছে। বোহোলের মৃতের সংখ্যাটি তাদের জানা আছে কিনা, এমন প্রশ্নে দেশটির দুর্যোগ সংস্থা জানায়, তাদের অপারেশন্স ইউনিট প্রাদেশিক ইউনিটের দাপ্তরিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছে।
বৃহস্পতিবার ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯৫ কিলোমিটার গতির বাতাস নিয়ে সাগর থেকে দ্বীপপুঞ্জটির স্থলভাগে উঠে আসে রাই। এর তাণ্ডবে অসংখ্য ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অন্তত ৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ লাইনগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ইয়াপ জানান, রাই তাণ্ডব চালানোর দুই দিন পরও বোহোলের বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ লাইনগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
লোবোক নদীর মতো ফিলিপিন্সের অনেকগুলো জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য আছে বোহোলে। কিন্তু টাইফুনের পর লোবোকে বন্যা দেখা দেখা দিয়েছে। নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক ভিডিওতে ইয়াপ বলেন, “এটি অত্যন্ত পরিষ্কার, বোহোলের সব এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর ধ্বংস ও ফসলহানি হওয়ায় লোকজন মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছে।”
বিশেষভাবে সুপেয় পানিসহ ত্রাণ সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। রাই চলতি বছর ফিলিপিন্স দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানা ১৫তম টাইফুন এবং সবচেয়ে প্রাণঘাতী ক্রান্তীয় ঝড়গুলোর একটি। গমনপথে ঝড়টি দেশটির নয়টি দ্বীপে তাণ্ডব চালিয়েছে। সেবু, লেইতে, সুরিগাও দেল নর্তে, সিয়ারগাও ও দিনাগাত প্রদেশে ব্যাপক ধ্বংসের একটি পথরেখা রচনা করে এগিয়ে গেছে রাই।
দিনাগাত প্রদেশের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা জেফরি ক্রিসোস্তোমো জানিয়েছেন, ঝড়ে দ্বীপটির দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্যোগ সংস্থার দাপ্তরিক সংখ্যায় এসব মৃত্যুর তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা রয়টার্স তা পরিষ্কার করে জানাতে পারেনি।
টাইফুন রাই এখন ফিলিপিন্স দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে দক্ষিণ চীন সাগরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দ্বীপপুঞ্জটিতে এখনও ৪ লাখেরও বেশি মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রয়ে গেছেন বলে রোববার সকালের হালনাগাদ তথ্যে জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ সংস্থা। প্রায়ই শক্তিশালী ঝড় হয় ফিলিপিন্সে। বছরে গড়ে ২০ টি ঝড় আঘাত হানে এ দেশটিতে। এতে ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে, গাছপালা উপড়ে পড়ে এবং বন্যা ও ভূমিধসে বহু প্রাণহানি হয়। গতবছরের নভেম্বরে সুপার টাইফুন গনিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং প্রাণহানি দেখেছিল ফিলিপিন্স। ২০১৩ সালে টাইফুন হাইয়ানে নিহত হয়েছিল ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ।