শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মান্দা প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় বোরো ধানের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এরই মধ্যে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। চারা তৈরির উপযুক্ত আবহাওয়া বিরাজ করায় স্বস্তিতে রয়েছেন তাঁরা।
কৃষকেরা বলছেন, দিনের বেলায় রোদ ও রাতে কম ঠান্ডা বিরাজ করছে। এখন পর্যন্ত কুয়াশা পড়েনি, শৈত্যপ্রবাহও নেই। শীত বেশি হলে চারা গজানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই বর্তমান সময়কে উপযুক্ত মনে করে আগাম জাতের ধানের চারা তৈরিতে তাঁদের ব্যস্ত সময় কাটছে।
কৃষকদের দাবি, শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে চারা হলুদ ও বিবর্ণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তখন বীজতলার পরিচর্যা করতে হিমশিম খেতে হয়।
নওগাঁর বদলগাছি আবহাওয়া দপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তা হামিদুল হক জানান, সোমবার দুপুর পর্যন্ত এ অঞ্চলে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সকাল ৯টায় ছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। আগামি দু’তিন দিনের মধ্যে এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃত্যু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে ৯৫০ হেক্টর থেকে ১ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি হবে। রোপণ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুল হলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের উপজেলায় চারা সরবরাহ করেন কৃষকেরা।
সূত্রটি আরও জানায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে জিরাশাইল, ব্রি ধান-৮১, ব্রি ধান-২৮, ব্রি ধান-২৯, ব্রি ধান-৫০, ব্রি ধান-৫৮, কাটারিসহ হাইব্রীড জাতের ধান চাষে কৃষকেরা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। চাষের লক্ষ্যে এসব জাতের বীজ সংগ্রহ করছেন তাঁরা। তবে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে জাতির জনককে বিশেষ সম্মাননা জানাতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত জাত ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’ উপজেলার দুইটি প্রদশর্নী প্লটে চাষ হচ্ছে।
উপজেলার নুরুল্লাবাদ গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, চলতি মৌসুমে ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করবেন। এরই মধ্যে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে গজানো ধান বীজতলায় বপণ করবেন। এবারে ব্রি ধান-৮১ জাতের ধান চাষ করবেন বলেও জানান তিনি।
বিলউথরাইল গ্রামের কৃষক মসলেম উদ্দিন জানান, আবহাওয়া ভাল থাকায় দুই সপ্তাহ আগে বীজতলায় গজানো ধান বপণ করেন। এরই মধ্যে চারা গজিয়ে বেশ সতেজ ও সবুজ বর্ণ ধারণ করেছে। এবারে চারার মান অনেক ভাল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। রোপণের বিপরীতে বীজতলা তৈরি করছেন কৃষকেরা।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত বীজতলা তৈরির উপযুক্ত আবহাওয়া বিরাজ করছে। চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ার মত প্রতিকূল পরিবেশ নেই। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে বীজতলা পলিথিন পেপার দিয়ে ঢেকে দিলে চারা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।