সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
বদলগাছী প্রতিনিধি: নওগাঁর বদলগাছীর বিলাশবাড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় বিজয়ী মেম্বার প্রার্থীর কর্মী বিধান চন্দ্র নিহত হয়েছে।
এ ঘটনায় আরো ২০-২৫ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত বিধান চন্দ্র ওই ইউনিয়নের চকাবীর আদিবাসীপাড়ার গোপাল চন্দ্রের ছেলে। তিনি ওই ওর্য়াডের বিজয়ী ইউপি সদস্য শাহীন হোসেনের কর্মী ছিলেন। বর্তমানে ওই গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবারো সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে রোববার অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে বদলগাছীর বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের মেম্বার পদে শাহিন হোসেন বিজয়ী হন। তিনি বিকালে কর্মী-সমর্থকদের সাথে নিয়ে এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন এবং পরাজিত বিপক্ষ মেম্বার মিজানুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে চান।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে পরাজিত মিজানুর রহমানের কর্মী-সমর্থকেরা ও বিজয়ী শাহিনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে।
পরে পরাজিত প্রার্থীর লোকজনেরা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেন বিজয়ী শাহীনের কর্মী-সমর্থকেরা তাদের উপর হামলা চালাচ্ছে। এরপর গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শাহীনের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়।
এতে উভয় পক্ষের ২০-২৫জন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুত্বর আহত বিধান চন্দ্রকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকালে তার মৃত্যু হয়। আর আহতদেরকে নওগাঁসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলা শিকার নবনিবাচিত ইউপি সদস্য শাহিনুর বলেন, সোমবার বিকেলে আমি কর্মী-সমর্থক নিয়ে পরাজিত প্রার্থী মজনুর গ্রামের বাড়ি এনায়েতপুরে তার সাথে সৌজন্য স্বাক্ষাত করতে যাই। এসময় মজনুর নেতৃত্বে তার কর্মী-সমর্থক আমাকেসহ কর্মীদের উপর অর্তকিত হামলা চালায়। একপর্যায় তারা মসজিদের মাইকে প্রচার করে, আমরা মজনুর বাড়িতে হামলা করেছি। গ্রামের লোকজন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরকে বেধড়ক মারপিট করে। এতে আমিসহ আমার ১০-১২ কর্মী-সমর্থক আহত হয়।
তাদের মধ্যে বিধান চন্দ্র মঙ্গলবার বিকালে বগুড়া মেডিক্যালে মারা যায়। তবে শাহিনুর অভিযোগ প্রত্যাখান করে পরাজিত প্রার্থী মিজানুর রহমান মজনু বলেন, শাহিনুর বিজয় মিছিল নিয়ে আমার বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এসময় গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হলে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এই ঘটনায় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
নওগাঁর বদলগাছি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় দুপক্ষই থানা দুটি অভিযোগ দিয়েছেন। এরমধ্যে একজনের মৃত্যূর সংবাদ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া এলাকায় সার্বিক আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।