২০ বছরেও পত্তনী সম্পত্তি পাননি ভূমিহীন আলতাব

ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি: ৮ বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে দেশে চিকিৎসা নিয়ে আশানুরুপ ফল না পেয়ে অর্থকড়ি সংগ্রহ করে বড় ভাইয়ের সাথে ভারতে গিয়ে চিকিৎসাও নিয়েছেন র্দীঘদিন। তবে চিকৎসায় তেমন কাজ হয়নি। কিন্তু ভরতে হঠাৎ তার সাথে থাকা বড় ভাইয়ের মৃত্যুতে তার জীবনে নেমে আসে অবর্ননীয় দুঃখ-কষ্ট।
প্রায় ১ যুগ আর দেশে ফিরে আসতে পারেন নি। ঘরেছেন ভারতের বিভিন্ন স্থানে। ১ যুগ পরে নিজ বাড়িতে ফিরে আসলেও পিতার জমিজমা বাড়িঘর সব কিছু থেকে অধিকার বঞ্চিত সত্যচন্দ্র হওয়লাদারের জীবনের মোড়ে ঘুরে স্বধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে হয়েছেন আলতাব হোসেন।
বলছিলাম সত্য চন্দ্র হাওলাদারের কথা। পিতা প্রিয়নাথ চন্দ্র হওলাদার জন্মভুমি মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার নয়াকান্দিবাজিতপুর গ্রামে। বর্তমানে তিনি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার বড়াল ব্রীজ স্টেশন এলাকায় রেল লাইন সংলগ্ন স্থানে সরকারি রেল ওয়ের ভুমিতে বাসবাস করছেন।
প্রায় ২০ বছর পুর্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভুমি) ভাঙ্গুড়া, পাবনা তাকে ও তার স্ত্রী ভুলুকে ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের কৈডাঙ্গা মৌজার ১ নং খতিয়ানের ৩১৫ নং দাগের ১৪ শতক খাস ভুমি পত্তনী দেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল খালেক, আব্দুল মালেক, সাইদুল ইসলাম, রফিক ও তফিজ তার পত্তনী খাস জমি দখল দেন নি বলে অভিযোগ তার। বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়ে ধরণাও ধরেছেন বছরের পর বছর। আশ্বস্ত করেছেন স্থানীয় নেতৃত্ব স্থানীয় অনকে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নি।
শরৎ নগর বাজার পশুর হাটের জায়গায় তোলা ঝুপরি চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে আলতার হোসেনের সাথে একান্ত আলপচারিতায় জানা যায়, আলতার হোসেন এক সময়ের সত্য চন্দ্র হাওলাদার ৮ বছর বয়সে অসুস্থ্য হয়ে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে দেশে চিকিৎসা নিয়ে আশানুরুপ ফল না পেয়ে অর্থকড়ি সংগ্রহ করে বড় ভাইয়ের সাথে ভারতে গিয়ে চিকিৎসাও নিয়েছেন র্দীঘদিন। কিন্তু বিধিবাম।
চিকিৎসায় তার পায়ের উন্নতি না হলেও সাথে থাকা বড় ভাইয়ের মৃত্যুতে তিনি যথা সময়ে আর দেশে ফিরে আসতে পারেন নি। ঘরেছেন ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছেন প্রায় ১ যুগ। এরপর দেশে ফিরে নিজ জন্মভুমি মাদারীপুরে ফিরে আসলে তার পিতামাতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ক্ষোভে দুঃখে বাড়ি থেকে বেড় হয়ে ট্রেন যোগে পাবনার ভাঙ্গুড়া বড়ালব্রীজ স্টেশনে নেমে আর কোথাও যান নি। পরে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন হয়েছে আলতার হোসেন।
ভিক্ষাবৃত্তি করে চলে বিবাহ করে পেতেছেন সংসার। বর্তমানে দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে অতি কষ্টে দিন পার করছেন। বসবাস করছেন রেললাইন সংলগ্ন ভুমিতে।
জানা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ভাঙ্গুড়া, পাবনা ২০০১ সালে তাকে ও তার স্ত্রী ভুলুকে ভাঙ্গুড়া ইউনয়নের কৈডাঙ্গা মৌজার ১ নং খতিয়ানের ৩১৫ নং দাগের ১৪ শতক ভুমি বন্দ্যোবস্ত দেন।
উপজেলা ভুমি অফিস, ইউনিয়ন ভুমি অফিস তার কাগজ পত্র বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ভুমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধ করে আসছেন।
কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল খালেক, আব্দুল মালেক, সাইদুল ইসলাম, রফিক, তফিজরা তার পত্তনী ভুমি দখল করে আছেন। ভূমিহীন আলতার পঙ্গু, অসহায় ভিক্ষুক নিজনামীয় পত্তনী ভূমি দখল পেতে বিভিন্ন স্থানে সহযোগিতার জন্য ঘুরেছেন। আশ্বস্ত করেছেন অনেকেইে কিন্ত কাজের কিছুই হয় নি।
বর্তমানে রেল লাইন তথা বড়াল ব্রীজ স্টেশন সংষ্কারের কাজ শুরু হলে তিনি হতাশায় ভুগছেন পরিবার নিয়ে তিনি যাবেন কোথায়?
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ভাঙ্গুড়া, পাবনা ২০০১ সালে তাকে ও তার স্ত্রী ভুলুকে ভাঙ্গুড়া ইউনয়নের কৈডাঙ্গা মৌজার ১ নং খতিয়ানের ৩১৫ নং দাগের ১৪ শতক ভুমি বন্দোবস্তকৃত ভুমি দখল পেতে সংশ্লিষ্ঠ সকলের প্রতি আহব্বান জানিয়েছেন ভুমিহীন পঙ্গু আলতাব হোসেন। এসময় তিনি আরও আক্ষেপ করে বলেন, দখল যদি না পাই তাহলে সরকার তার পত্তনী ভুমি যেনো বাতিল করে দেন।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২১ | সময়: ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ