
রোজিনা সুলতানা রোজি : এমন এক সময় ছিল যখন মেয়েদের সাইকেল চালানোকে সমাজ নেতিবাচক দিক হিসেবেই দেখতো। মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেয়া হত যখন তারা বুঝতোই না যে বিয়ে কি? সাইকেল চালানো তো দূরের কথা মেয়েদের পড়ালেখারও তেমন সুযোগ দেয়া হত না। কিন্তু সমাজ আজ আধুনিকতার ছোঁয়ায় সচেতন হয়েছে। সমাজের মানুষ বুঝতে পেরেছে যে বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সামাজিক উন্নয়নের জন্য নারীর সার্বিক উন্নয়ন সর্বাগ্রে প্রয়োজন। তাই সরকার নারী-পুরুষ সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় মেয়েরা আজ উচ্চ শিক্ষিত হয়ে বিভিন্ন অফিস-আদালত, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানীগুলোতে চাকরি এবং নানা কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখছে। তাইতো অনেক নারীরাই আজ তাদের স্বপ্ন পূরনে সাইকেলে চড়ছেন। যাচ্ছে স্কুলে-কলেজে।
সাফল্যের পথে চলার জন্য থেমে নেই গ্রামের মেয়েরাও। এমন মেধাবী ৩৮ ছাত্রীকে তাই বিনামূল্যে সাইকেল দেওয়া হয়েছে। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে সম্প্রতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের মধ্যে সাইকেল বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে ওই ছাত্রীদের বাল্যবিয়ে বিরোধী শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। এ সময় শিক্ষা অর্জনে আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ারও শপথ নেয় তারা।
এই উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাংসদ প্রফেসর ডা. মনসুর রহমান।
পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ ও সদস্য অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক প্রমুখ।
সাইকেল বিতরণ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে পুঠিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়। পরে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত আরও সহজ ও নিয়মিত করতে সাইকেলের এই প্রণোদনা দেওয়া হয়।